Smriticharon | Bengali Short Story |Piprerdol

 স্মৃতিচারণ

লেখায়: seva khan

অলংকরণ: দীপঙ্কর রায় (@tomader_Dipu )


আজ হঠাৎ ঠাকুরের ফল প্রসাদ খেতে খেতে ওর কথা মনে পড়ল। আসলে ও আমার crush ছিল, ছোটবেলা থেকেই। সেই যখন আমি 7 কী 8 এ পড়ি, তখন থেকেই। তারপর পড়ার batch change হয়, আর ওর স্মৃতি ও হারাতে থাকে। হটাৎ চার পাঁচ বছর পর ওকে ফেসবুক এ দেখি, তারপর কথা শুরু – আমার তো ওকে প্রথম থেকেই পছন্দ ছিল, হটাৎ দেখি ওর ও আমাকে পছন্দ বললো– তারপর তো দেখা, আরো অনেক কিছু।

– কীরে, থামলি কেন? পড় তারপর। বলল রিমি।

– তারপর তো বাকিটা আর নেই। বললো সৈকত। 

– নেই মানে? এরকম ভাবে কোনো স্টোরি শেষ হতে পারে নাকি? বাকি পাতা গুলো কই?

– আর নেই রে, আমি অনেক খুঁজেছি। এটুকুই ছিল।

– Shit! এতো সমস্যা হয়ে গেল। আচ্ছা শোন, এটা কার লেখা? 

– মনে হয় মায়ের। আমি ঠিক জানিনা। এই চিলেকোঠা তে একদিন দেখি। 

– তাহলে চল, aunt কে গিয়ে জিজ্ঞাসা করি। গল্প টা তো বেশ ইন্টারেস্টিং। এভাবে ছাড়তে পারছি না। 

– মাকে জিজ্ঞাসা করা অত সোজা নাকি? জানিস না, কিরকম ভয় পাই, আসলে মায়ের chaildhood টা তো খুব একটা ভালো নয়, তুই তো জানিস, তাই মা নিজের ছোটবেলা নিয়ে কথা বলতে ভালোবাসে না। তবুও দেখবো একবার চেষ্টা করে।


*******************

"Next patient, please!' – একটু গলা তুলে বললেন ড.শর্মিলী বাসু। "হ্যাঁ বলুন, কি অসুবিধা হচ্ছে?"

– আসলে ডাক্তারবাবু, আমি কদিন ধরে খুব নার্ভ এর সমস্যায় ভুগছি। হাত পা টান ধরছে খুব ঘন ঘন। আর গায়ে একদম জোর পাচ্ছি না। 

– 'আচ্ছা। হাত টা দেখি" বলে pulse চেক করলেন ডাক্তার বসু। "খুব কম pulse rate। খাওয়া দাওয়া করছেন না? এসব একদম করবেন না। ভালো করে খান, তবে একটা x -ray করিয়ে next week এ আমাকে দেখবেন। আপাতত কোনো ওষুধ দিচ্ছি না। খাবার ও জল খান বেশি করে, ব্যাস। 

"উফফ, খুব মাথা টা ব্যাথা করছে। আর কটা patient আছে, মনামী? – recoptionist কে জিজ্ঞাসা করেন ডক্টর বাসু। 

"এই ত maam, আর দুজন"। উত্তর দেয় মনামী।

"Achcha, তাড়াতাড়ি করো। আজ বাড়ি চলে যাব তাড়াতাড়ি। মাথা টা ব্যাথা করছে। 

* * * * * * * * * * * * * * * 

" Good evening, বাবা", বললো সৈকত। 

"Good evening, বাবাই" বললেন নীলাঞ্জন বাবু। 


"বাবা, আমি একটা জিনিস কুড়িয়ে পেয়েছি, চিলেকোঠার ঘরে, তবে অর্ধেক টা। তাই ভাবলাম তোমায় বলি'"

 –" হ্যাঁ দেখি, কি পেয়েছিস?"

সৈকত কাগজের টুকরো টা বাবা কে দেখালো। নীলাঞ্জন বাবু খুব মন দিয়ে পড়লেন, তারপর বললেন, "এত তোর মায়ের হাতের লেখা। তবে এটা যে কার ব্যাপারে লিখেছে সেটা বুঝতে পারছি না।"

– আমার তো মাকে জিজ্ঞাসা করতে ভয় হয়। তুমি একটু জিজ্ঞাসা করবে?

– সে নয় করবো। তবে তুই তো জানিস, মা ছোটবেলা নিয়ে কথা বলতে ভালোবাসে না। তাও দেখি জিজ্ঞাসা করে। 

* * * * * * * * * * * * * * * * 

ডক্টর বাসু বাড়ি ফিরে , ফ্রেশ হয়ে গ্রিন tea নিয়ে বারান্দায় বসলেন। একটু পড়ে ওনার husband এসে বললেন, "আজ dinner আমি বানিয়েছি। সব তোমার ফেভারিট।"

– তাই? তুমি কি করে জানলে, আমার কি খেতে ইচ্ছা করছে?"

– আমার মন থেকে বানিয়েছি। আর এত বছরে তোমাকে এটুকু তো চিনেছি, যে কি কখন খেতে পছন্দ করো। 

ডক্টর বাসু হেসে উঠে গেলেন dinner টেবিলে এর দিকে। 

ওমা, এত সব ওনার পছন্দ এর জিনিস। উনি তো আজকে এগুলোই খেতে চাইছিলেন– butter চিকেন, রাজমা chawal, স্যালাড, paneer রোল ও আছে সাথে। 

"বাপরে, করেছ কি তোমরা? " হাসতে হাসতে , অবাক হয়ে বললেন ডক্টর বাসু। 

সৈকত বললো, 'মা, খেয়ে বলো কেমন হয়েছে। আমি আর বাবা দুজন মিলে বানিয়েছি।"

খাবার টেবিলে সব কিছু ভালোভাবে মিটল। তারপর বাবা, ছেলে গুছিয়ে বসে ধরলো শর্মিলী কে লিভিং রুমে। 

"তোমার কাছ থেকে একটা জিনিস জানার আছে আমাদের।" 

– হ্যাঁ বলো।

– এই চিঠি টা দেখো। তুমিই লিখেছো। অর্ধেকটা নেই। কাকে লিখেছিলে? আর বাকিটা কোথায়? এই দুটো প্রশ্ন আমাদের। 

শর্মিলী হাতে নিয়ে চিঠি টা পড়ল। তারপর তারিখ টা দেখলো। 2018। তারমানে তো বহু বছর।  ক্লাস 7 কি 8 এ কে crush ছিল, তা তো মনে পড়ছে না। একটু সময় নিয়ে শর্মিলী কৌতুক ভরা চোখে বললো, "তোরা সত্যি জানতে চাস, এটা কে ছিল?"

 বাবা, ছেলে সমস্বরে বলে উঠলো, "একদম"। 

"আচ্চা, ঠিক আছে, বলছি। শোন তাহলে।"

তারপর নীলাঞ্জন এর দিকে তাকিয়ে বলল, "তোমার সাথে আমার প্রথম কোথায় দেখা হয়?"

নীলাঞ্জন তোতলাতে থাকে– ওই তো স্কুলে পড়ি যখন। কিন্তু তখন তো আমি তোমাকে চিনতাম না। চিনেছি তো অনেক পরে। 

– হ্যাঁ, তা ঠিক। তবে অত দূর যেতে হবে না। তুমি তখন কোন ক্লাস এ পড়তে?

– ওই 9 কি 10.

– exaxtly। তুমি আমার থেকে 2 বছরের বড়। মানে আমার তখন 7 কি 8। এন্ড you were my crush at that time.

নীলাঞ্জন তো পুরো হাঁ। "বলো কী! আমি তোমার crush ছিলাম! কই, কখনো বলোনি তো? "

" বলিনি, কারণ সেরকম সুযোগ পায়নি। এখন তো জানলে, কেমন লাগলো বলো surprise টা।"

" দারুন। এক কথায় অসাধারণ.."

সৈকত এতক্ষন প্রাণ ভরে এনজয় করছিল বাবা মায়ের এই খুনসুটি। সবশেষে সে বলল, "আচ্ছা, তোমাদের বিয়ের গল্প কখনো শোনা হয়নি। বল তো আজকে শুনি।" 

"না, না,  এখন একদম নয়। অনেক রাত হয়েছে, শোবে চলো।" বলে টানতে টানতে দুজন কে ঘরে নিয়ে যায় শর্মিলী।



Comments

Post a Comment